প্রকাশ :
২৪খবর বিডি: 'দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই নতুন করে যুক্ত হচ্ছে গ্যাসের বাড়তি দাম। আজ রোববার থেকে গ্যাসের মূল্য বাড়িয়ে নতুন দর ঘোষণা করবে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি। বেলা ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা করা হবে বলে বিইআরসি সূত্র জানিয়েছে। নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ায় নিত্যপণ্যের দামে নাভিশ্বাস ওঠা জনজীবনে নতুন করে চাপ তৈরি করবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। গ্যাসের দাম বাড়ানোর গণশুনানিতেই এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছিল ভোক্তা অধিকার সংগঠনগুলো। বিইআরসি সূত্র জানায়, বিতরণ কোম্পানিগুলো ১১৭ শতাংশের মতো দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করলেও গড়ে ১৭ থেকে ২০ শতাংশ দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। বিশেষ করে আবাসিক সংযোগে দাম বাড়বে কম। এক্ষেত্রে দ্বৈত চুলার ক্ষেত্রে মাসিক ৯৭৫ টাকা থেকে বেড়ে ১০৮০ বা ১১০০ টাকা হতে পারে। এ ছাড়া গ্যাসের প্রি পেইড মিটার গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ৪৫ ভাগ পর্যন্ত দাম বাড়তে পারে। অন্যখাতগুলোতে সমন্বয় করে দাম বাড়ানো হবে। '
বিইআরসি’র একজন কর্মকর্তা গতকাল জানান, গড়ে প্রায় ১৭ থেকে ২০ ভাগের মতো দাম বৃদ্ধির চিন্তা করা হচ্ছে।
-বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ১১৭ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গত মার্চ মাসে টানা চারদিন গণশুনানি করে বিইআরসি। ওই সময় বিইআরসি’র কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি ২০ শতাংশ দাম বৃদ্ধির পক্ষে মতামত দেয়। যদিও ওই গণশুনানিতে অংশ নিয়ে ভোক্তা অধিকার সংগঠনগুলো মূল্য বৃদ্ধির বিরোধিতা করে। কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, গ্যাস বিতরণকারী প্রতিটি কোম্পানি লাভে রয়েছে। বর্তমান অবস্থায় জনগণের বাড়তি দাম দেয়ার সামর্থ্য নেই। বরং বর্তমান অবস্থায় গ্যাসের দাম কমানো যায়। সরকার ভাট-ট্যাক্সসহ নানাভাবে টাকা নিয়ে যাচ্ছে। কোন কোম্পানি কত ডিভিডেন্ট দিবে সেই সিদ্ধান্তও চাপিয়ে দিচ্ছে। তারা মুনাফা তুলে দিচ্ছে আর কোম্পানিগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে গ্রাহকের কাছে টাকা চাইছে। গণশুনানিতে অংশ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, সিস্টেম লস ও অনিয়ম বন্ধ করা হলে দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। বরং এসব অপচয় রোধ করা গেলে বিদ্যমান দামেই লাভ করতে পারবে বিতরণ কোম্পানি।
নতুন করে বাড়ছে গ্যাসের দাম
-এর আগে ২০১৯ সালে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছিল সরকার। ওই বছরের জুনে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়- যা ১লা জুলাই থেকে কার্যকর হয়। তখন আবাসিক খাতে দুই চুলার খরচ ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৭৫ টাকা আর এক চুলার খরচ ৭৫০ টাকা থেকে ৯২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। গৃহস্থালি মিটারে দাম বেড়ে প্রতি ঘনমিটারে ১২.৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৭.৩৮ টাকা থেকে ২.৪২ টাকা বাড়িয়ে ৯.৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। গড়ে দাম বাড়ে ৩২.০৮ শতাংশ। সিএনজি গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয় প্রতি ঘনমিটার ৪৩ টাকা এবং বিদ্যুৎ ও সারের জন্য ৪.৪৫ টাকা। হোটেল-রেস্তরাঁয় প্রতি ঘনমিটার ২৩ টাকা, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ১৩.৮৫ টাকা, শিল্প ও চা বাগানে ১০.৭০ টাকা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ১৭.০৪ টাকা। নতুন করে দাম বাড়ানোর পর এসব ক্ষেত্রে মূল্য সমন্বয় করা হবে বলে বিইআরসি সূত্র জানিয়েছে।